২০২২ সালে ডিজিটাল মার্কেটিং ট্রেন্ডস

বর্তমান সময়ে ডিজিটাল মার্কেটিং এর কোন বিকল্প নেই। ২০২২ সালে ডিজিটাল মার্কেটিং এর যে বিষয়গুলো প্রতিটি ডিজিটাল মার্কেটারের লক্ষ্য রাখা দরকার, সেগুলো হচ্ছে,

Search intent

কেউ একজন যখন গুগল, ইউটিউব বা ফেসবুকে কিছু একটা লিখে সার্চ দেয়, তখন আপনাকে জানতে হবে সে আসলে কিসের জন্য সার্চ দিয়েছে। এবং এখান থেকে কি পেতে চায়। সে অনুযায়ী আপনার কনটেন্ট সাজাতে পারলে তবেই আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং এ সাফল্য আসবে।

সরাসরি মুখে কথা বলা

আমরা অনেক ভাবেই পণ্য/সেবার মার্কেটিং ব্র্যান্ডিং করতে পারি। সেটা হতে পারে গ্রাফিক্স ডিজাইন, এনিমেশন ভিডিও তৈরি করে কিংবা ব্লগ লিখে। কিন্তু গ্রাহক সবচেয়ে বেশী ভরসা পায় মুখের কথায়। তাই সম্ভব হলে ক্যামেরার সামনে এসে প্রোডাক্ট বা সার্ভিস নিয়ে কথা বললে আস্থা তৈরি করা অনেক সহজ। প্রয়োজনে শুধু মুখে অডিও দিয়ে স্ক্রিনে ভিডিও দেখিয়েও সম্ভব।

ইউজার প্রাইভেসি

বর্তমানে ইউজারের প্রাইভেসি খুব বেশী একটা সংরক্ষিত নয়। প্রায়ই দেখবেন, আপনি কিছু একটা নিয়ে কথা বললে সেটার বিজ্ঞাপন আপনাকে ফেসবুক গুগল সব জায়গায় দেখাচ্ছে। এর কারণ একটিই, সেটি হচ্ছে তারা ইউজারের ডাটা নিয়ে এনালাইসিস করে সে অনুযায়ী এড সারভ করে। কিন্তু ২০২২ সালে টেকনোলোজির জায়ান্ট সংস্থাওগুলো এই বিষয়ে একমত হয়েছে যে, ইউজারের প্রাইভেসি রক্ষা করতে হবে। তাই ধীরে ধীরে এই ইউজার প্রাইভেসি লংঘন করার প্রসেসগুলো কমিয়ে আনা হচ্ছে। অলরেডি এপলের লেটেস্ট ডিভাইসগুলোতে এবং লেটেস্ট ব্রাউজারগুলোতে থার্ড পার্টি কুকিজ এর সাপোর্ট কমিয়ে আনা হয়েছে। এন্ড্রয়েডের লেটেস্ট ভার্সন ফোনগুলোতে দেখবেন স্পিকারে না থাকলে কোন অ্যাপ দিয়ে কল রেকর্ডও করা যায় না। এই পরিবর্তনগুলো আসার পর থেকে ডিজিটাল মার্কেটারদের হতে হবে আরো বেশী কৌশলী।

মাল্টি চ্যানেল মার্কেটিং

এই মার্কেটিং পদ্ধতি হচ্ছে একটি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের সবগুলো মিডিয়াতে সক্রিয় থাকতে হবে। ফিজিক্যালি একটি শপ থাকতে হবে, তেমনি ওয়েবসাইট থাকতে হবে এসইওতে স্বয়ংসম্পূর্ণ, আবার ফেসবুক ইউটিউব সহ সবগুলো সোশ্যাল মিডিয়াতে সক্রিয় থাকতে হবে। তাহলেই প্রপারলি সেলস জেনারেট করা সম্ভব। শুধুমাত্র একটি মাধ্যমকে পুজি করে সামনের দিনগুলোতে ব্যাবসা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।

ভিডিওর গুরুত্ব

অন্য যে কোন মাধ্যম থেকে ভিডিওর গুরুত্ব প্রতিনিয়তই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এবং সেটা কোন এনিমেটেড বা এডিট করা ভিডিও থেকে একদম রিয়েল প্রোডাক্টটি সামনে নিয়ে করা ভিডিওই ইউজার বেশি পছন্দ করে। তাই এই বিষয়টি ২০২২ সালে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। আগে প্রত্যন্ত অঞ্চলের ইউজারদের ইন্টারনেট স্পিড সীমাবদ্ধতার কারনে ভিডিও দেখতে কার্পণ্য করা হত। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশে ৫জি স্পিড যেমন রয়েছে, তেমনি ইন্টারনেটের দামও অনেকটা হাতের নাগালে। তাই ভিডিও দেখাও ইউজারের জন্য সহজ হয়ে এসেছে।
ইউজার ডাটাঃ একবিংশ শতাব্দির সেরা একটি পেশা হচ্ছে ডাটা সায়েন্স। যার কাছে যত বেশী ইউজার ডাটা কিংবা লিড রয়েছে। তাঁর ব্যাবসায়িক সাফল্য তত সহজ হয়ে আসছে। দিন দিন ডাটা একটি সম্পদে রুপান্তরিত হচ্ছে। ২০২২ সালেও তাই যে ডাটা এনালাইসিস যত বেশী করবে, সে তত দ্রুত ডিজিটাল মার্কেটিং এ সাফল্য পাবে।

যতদূর সম্ভব সংক্ষিপ্ত করা

একটা সময় ছিলো যখন কনটেন্ট যত বেশী বড় হত, তত এসইও এর জন্য পজিটিভ হত। ৩০০০-৪০০০ শব্দের কনটেন্ট বেশী গ্রহণযোগ্য ছিলো। বর্তমানে সাধারণ মানুষের ধৈর্য তুলনামূলক কম। তাই লিখিত কনটেন্ট যেমন সংক্ষিপ্ত হওয়া জরুরী তেমনি ভিডিও ছোট হওয়া জরুরী। নাটক, মুভি ছাড়া অন্য কোন ভিডিওই এখন আর কেউ ১-২ ঘন্টা ধরে দেখে না। এমনকি মুভিও এখন এক্সপ্লেইন দেখে। মুভির গল্প সংক্ষেপে বলে দিয়েছে এরকম ভিডিওগুলোতে মিলিয়ন মিলিয়ন ভিউ।

সেল করার মত কনটেন্ট

সেল করার জন্য আলাদা বিজ্ঞাপন তৈরি না করে, কনটেন্ট তৈরি করতে হবে যে কনটেন্ট দেখে মানুষ কিনতে আগ্রহ বোধ করে। বিজ্ঞাপন এখন এত বেশী চতুর্দিকে যে বিজ্ঞাপন দেখার আগেই মানুষ Skip Ad এ ক্লিক করে সেটা যত ভালো বিজ্ঞাপনই হোক না কেন।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স

ডিজিটাল মার্কেটিং এ প্রতিনিয়তই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যাবহার বাড়ছে। রবির ফেসবুক পেজে কিংবা ইস্টার্ন ব্যাংকের EBL দিয়া পেজে মেসেজ দিন। দেখবেন কোন কাস্টমার কেয়ার এক্সিকিউটিব এর সাহায্য ছাড়াই অটোমেটেড সফটওয়্যার কিছু প্রশ্ন উত্তরের মাধ্যমে আপনার সমস্যা সমাধান করে দিচ্ছে।

ডিজিটাল কারেন্সি

২০২২ সালে ক্যাশ টাকার প্রচলন আরো কমবে। পেমেন্ট অ্যাপ্স কিংবা ইণ্টারনেট ব্যাংকিং এর ব্যাবহার অনেকাংশেই বেড়ে যাচ্ছে। তাই পেমেন্ট গেটওয়ে কিংবা এগুলোর সিকিউরিটির বিষয়গুলো অবশ্যই ডিজিটাল মার্কেটার দের মাথায় রেখে সামনে এগুতে হবে

Leave a Reply